আয়নার ভেতরে

আয়নার ভেতরে

ঢাকার পুরোনো এক এলাকায়, এক ঝাক বটগাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে আছে এক জমিদার বাড়ি। সেখানেই থাকতো শিউলি, জমিদারের এক দূর সম্পর্কের নাত্নি। রূপে-গুণে অপরিসীম শিউলি, কিন্তু সে একটা অদ্ভুত রোগে ভুগছিল। সে আয়নায় নিজেকে দেখতে পারতো না।

ছোটবেলা থেকেই যখনই সে আয়নার সামনে দাঁড়াতো, দেখতো শুধু ধোঁয়াটে একটা কালো ছায়া। ডাক্তার, কবিরাজ দেখান হয় কিন্তু কোন সুফল পাওয়া গেলো না। শিউলির এই অসুস্থতা নিয়ে গুঞ্জন চলতে থাকলো সেই এলাকায়। কেউ বলতো, জন্মের সময় নাকি জীনে নজর করেছে শিশুটিকে , কেউ আবার বলতো, এটা কোনো পূর্বজন্মের অভিশাপ।

এসব কথায় শিউলির কষ্ট বাড়তো। সে দিনের পর দিন নিজের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো, কিন্তু ফল একই। শিউলির ঘরে একটা দোলনা ছিল। একদিন, রাতের অন্ধকারে, সে নিজের ঘরের দোলনার সামনে দাঁড়ালো এবং দোলনায় দুলতে লাগলো। দুলতে দুলতে সে আয়নায় তাকাল।

অবিশ্বাস্য! দোলার গতির সাথে সাথে, আয়নায় তার ছায়াটাও দুলতে লাগলো। কিন্তু, সেটা আর ধোঁয়াটে কালো ছায়া নয়। এবার সে স্পষ্ট দেখতে পেল, একটা মেয়ে, তার চেহারায় অনেকটা মিল, কিন্তু চোখ দুটো জ্বলজ্বল লাল, আর কপালে একটা কালো তিল।

শিউলি চিৎকার করে উঠল। সে ঘরের সব আয়না ঢেকে দিল। কিন্তু এখন শুরু হল এক নতুন সমস্যা, সে যেখানেই যেতো, যে কোনো চকচকে জিনিসের প্রতিচ্ছবিতে, সে সেই মেয়েটিকে দেখা শুরু করলো।

দিন যত যায়, শিউলির অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। সে কথা বলতে পারতো না, শুধু চোখ দিয়ে সেই মেয়েটিকে দেখাতো। শেষ পর্যন্ত, এক অমাবস্যা রাতে, শিউলির ঘরের ঝুল থেকে ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেল। তার চোখ দুটো ছিল খোলা, আর মুখটা এঁটে থাকা, যেন সে চিৎকার করতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।

পুলিশ এসে তদন্ত করলো, কিন্তু কোনো ক্লু পেল না। কিন্তু পাড়ার লোকজন জানতো, শিউলি নিজের আয়নায় যে মেয়েটিকে দেখেছিল, সেই মেয়েটিই তাকে নিয়ে গেছে, চিরতরে, আয়নার অন্ধকার গহ্বরে।

Read more

রক্তজবা (The Red Hibiscus)

রক্তজবা (The Red Hibiscus)

এক ভুতুড়ে জমিদার বাড়ি, রক্তজবার অভিশাপ, আর রক্তির প্রতিশোধের ভয়ংকর গল্প "রক্তজবা"। বাংলার লোমহর্ষক লোককথার আবহে রচিত এই গল্প আপনাকে নিয়ে যাবে রহস্য আর ভয়ের অন্য এক জগতে।

কা,আন