ছবি - The Story of the Painting
মৃদু বাঁশির সুরে আর চা-বাগানের সবুদে ঢেউয়ে ঢাকা সেই পাহাড়ি শহরে বাস করতেন আবির। তার পুরোনো বাড়ির এক কোণে একটি অদ্ভুত ছবি টানা ছিল। ছবিতে এক মধ্যবয়সী মহিলা বসে আছেন, তাঁর চোখ দুটি খালি।
এই ছবিটা নিয়ে ছোটবেলা থেকেই আবিরের একটা অদ্ভুত ভয় ছিল। যখনই সে একা এই ছবির দিকে তাকাত, মনে হতো মহিলাটির চোখ দুটি তাকে ফিরিয়ে তাকাচ্ছে। বড় হওয়ার সাথে সাথে এ ভয় কমে গেলেও, একটা অস্বস্তি এখনও লেগেই থাকতো।
এক অঝড় রাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় বাড়িটা অন্ধকারে ঢেকে গেল। আবির মোমবাতি জ্বালিয়ে ঘরে থাকার চেষ্টা করছিল। হঠাৎ, সে লক্ষ্য করল ছবিতে হাত বাড়িয়েছেন মহিলাটি। তাঁর একটা হাত ছবির বাইরে এসেছে, যেন একটা অদৃশ্য দেয়াল ধরে আছেন।
আবিরের শরীর কাঁপতে শুরু করল। সে চোখ বন্ধ করে ঠাকুরের নাম নিতে লাগল। কিন্তু চোখ খুলতেই সে দেখল, মহিলাটি ছবির মধ্যে ফিরে গেছেন। তবে, তাঁর চোখ দুটি আর খালি নেই, সেগুলো এখন জ্বলজ্বল করছে, অদ্ভুত কৌতূহলে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে।
আবির আর সহ্য করতে পারল না। সে ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। রাত কাটাল বারান্দায়, ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষায়।
পরের সকালে আবির দেখল, ছবির মধ্যে মহিলার হাতটা আর বাইরে নেই। কিন্তু তাঁর চোখ দুটি এখনও আবিরের দিকেই তাকিয়ে আছে। তার মনে সবসময় সেই জ্বলজ্বল চোখের ছবিটা ঘুরপাক খায়। সে আর কখনো জানতে পারে নি, ছবিতে থাকা সেই মহিলা কে ছিলেন, আর তিনি কেন আবিরকে তাকিয়ে আছেন।