ফাঁটল - The Tear

কষ্ট থেকে বাঁচার জন্য মরিয়া, একটি পরিবারকে অশুভ ফিসফাসের মাধ্যমে ভয়ংকর জগতে প্রলুব্ধ করা হয়। তারা কি স্বাধীনতা খুঁজে পাবে, নাকি ছায়ার জগতে চিরকালের জন্য হারিয়ে যাবে?

ফাঁটল - The Tear

প্রথম অধ্যায়: ফিসফিস

ঢাকার আকাশ ভারী ছিল, বর্ষা আর হতাশার গন্ধে ভরা। তাদের টিনের চালের নিচে, খান পরিবার একসাথে বসে ছিল, একটি নিভৃত বাল্ব দেয়ালে লম্বা, কঙ্কালের মতো ছায়া ফেলেছিল।

১২ বছর বয়সী মায়া, সবার কনিষ্ঠ, তার চওড়া চোখে ঝলসানো আলো প্রতিফলিত হচ্ছিল। তার বাবা, রহিম, তার হাঁটুর উপর হেঁট হয়ে বসেছিলেন, তার মুখে ছিল এক চিন্তা, ভয়ংকর চিন্তা। কারণ দেয়ালের ফাটল থেকে একটা ফিশ-ফিশ শব্দ আসছিল।

ফিশ-ফিশ শব্দগুলো, দেয়ালের ফাটল থেকে আর্দ্র রাতের বাতাসে বয়ে যাচ্ছে। ফিশ-ফিশ গুলো নিজেদের একটি অদৃশ্য জগতের কথা বলতে শুরু করলো, একটি অদেখা জগত, তাদের নিজের একটি শীতল প্রতিধ্বনি। প্রথমে, এগুলোকে কেবল তাদের কল্পনার ক্ষীণ ছায়া হিসাবে, দীর্ঘ, গরম রাত এবং শহরের সর্বদা উপস্থিত কোলাহলের ফলাফল হিসাবে খারিজ করা হয়েছিল।

কিন্তু ফিসফাসগুলি আরও সাহসী হয়ে উঠল, স্বতন্ত্র কণ্ঠে রূপান্তরিত হল, প্রতিটি পাগলাपन থেকে এক চুলের দূরত্বে। তারা একটি দরজার কথা বলত, পুরান ঢাকার গলির গহ্বরে লুকিয়ে ছিল, অ untold ধন এবং তাদের অল্প জীবনের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। রহিম, তাদের দারিদ্র্য থেকে তার পরিবারকে বের করার জন্য হতাশ, ফিসফাসে নিঃশেষিত হয়ে গেলেন, তাদের প্রতিশ্রুতি অন্ধকারে একটি সাইরেন গান।

দ্বিতীয় অধ্যায়: অদৃশ্য দরজা

এক রাতে, অমাবস্যার আড়ালে, রহিম উধাও হয়ে গেলেন। আনিকা, তাঁর অন্ত্রকে কামড় দেওয়া ভীতি দিয়ে, পুরান ঢাকার গলিপথের মধ্য দিয়ে উन्मত্তভাবে অনুসন্ধান করলেন, ফিসফাসগুলি এখন তাঁর কানে বাজে উন্মাদনাপূর্ণ ক合唱 (গানের দল)। বাতাস ঘন হয়ে গেল, ছায়াগুলি লম্বা হয়ে গেল, কুৎসিত আকারে বাঁকা হয়ে গেল, তার দৃষ্টির কোণে নাচতে থাকল। তারপর, সে এটি দেখল - বাস্তবতার কাপড়ে একটি ছেঁড়া, গরমে মরীচিকার মতো ঝলমলে।

প্রাথমিক এবং স্বাভাবিক ভীতি আনিকাকে প্লাবিত করল। তবুও, প্রচণ্ড মাতৃভালোবাসা তাকে এগিয়ে যেতে প্রेरित করল। সে ছেঁড়ার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল, জগতটি ঘূর্ণায়মান রং এবং হাড় জ্বালা করা আর্তনাদের ক্যালিডোস্কোপে বিলীন হয়ে গেল। যখন সে অন্য দিকে পা incidel ড়িয়ে গেল, সে নিজেকে একটি নির্জন পতিত জমিতে দেখতে পেল, ঢাকার একটি বিশ্রুপিত প্রতিফলন, অস্বাভাবিক, অসুস্থ সবুজ আলোয় স্নাত। তার পায়ের নিচে মাটি জর্জর শব্দ করল, পরিচিত কুঁড়ি পাথরের একটি কুৎসিত অনুকরণ। একসময়ের জীবন্ত ভবনগুলি এখন কঙ্কালের মতো খালি ছিল, তাদের জানালাগুলি যেন গভীর শূন্যতায় তাকিয়ে থাকা ফাঁকা চোখ। দূরে, একটি বিশাল, কালো কালো সত্ত্বা kıpıştı (writhed), এর আকার পরিবর্তিত হচ্ছে এবং একটি জীবন্ত ছায়ার মতো স্পন্দিত হচ্ছে।

এটি এমন একটি শক্তি নিঃসরণ করছিল যা আনিকাকে মেরুদণ্ডে কাঁপিয়ে দিয়েছিল, এমন একটি ঠান্ডা যা তার হাড়ের মধ্যে গিয়ে ঢুকেছিল। তারপর সে তাদের দেখল - রহিম, তার চোখে কাঁচ, তার ঠোঁটে একটি শীতল হাসি, এবং মায়া, তার একসময়ের জীবন্ত আত্মা নিভে গেছে, তার জায়গায় ফাঁকা শূন্যতা। তারা শুধু খালি খোল ছিল, তাদের আত্মা দূরবর্তী সেই সত্ত্বা দ্বারা গ্রাস করা হয়েছিল। আনিকার গলা থেকে একটি চিৎকার ছিঁড়ে বেরিয়ে এল, হারানোর এবং বিদ্রোহের এক প্রাথমিক চিৎকার। কিন্তু তা ব্যর্থ। প্রাণীটি তার দিকে মনোযোগ দিল, তার অন্ধকারের টেন্ড্রিলগুলি এগিয়ে এল, বিস্মৃতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে।

তৃতীয় অধ্যায়: পাল্টা আক্রমণ

ঠিক যখন সব আশা হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল, একজন অপ্রত্যাশিত নায়কের আবির্ভাব ঘটে। আনিকার বড় ভাই ইউসুফ, একজন স্তব্ধ, সতর্ক ছেলে, সবসময় ফিসফাসের সম্পর্কে সন্দেহ জাগিয়ে তোলে, অন্ধকার তাকে দূরে সরিয়ে যেতে নাগালের বাইরে রেখেছে।

ইউসুফ, নিজের বোন এবং বাবাকে বাঁচানোর জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, শহরের প্রাচীন লোককথাগুলিতে ডুব দিয়েছিলেন, একটি গুপ্ত অস্ত্র অনুসন্ধান করতে যা সত্ত্বার শক্তিকে প্রতিহত করতে পারে। তিনি আবিষ্কার করেছিলেন, 'আলোর মুদ্রা'র কথা। ছোটবেলায় তার দাদী'র কাছ থেকে শুনতেন যে গল্প, সে গল্প মনে করে ইউসুফ তাদের ঘরে ছুটে যান, তার মায়ের পুরনো গয়না বাক্সের মধ্যে আলোর মুদ্রাটা খুঁজেন ।

চতুর্থ অধ্যায়: চূড়ান্ত যুদ্ধ

ইউসুফ হাতে মুদ্রা নিয়ে, ভীষণভাবে পতিত ভূমিতে প্রবেশ করল। মুদ্রাটি একটি নরম, গরম আলো নির্গত করেছিল, যা অন্ধকারকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। যখনই দুঃস্বপ্নের মত প্রাণীরা তাকে আক্রমণ করতে এল, সে মুদ্রাটি উঁচু করে ধরেছিল, এর শক্তি তাদেরকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল।

ইউসুফ সত্ত্বার দিকে চলে গেল, এর অন্ধকারের সাথে আলোর মুদ্রার বৈপরীত্য একটি স্টার্ক ছবি তৈরি করেছিল। সে তার বাবা এবং বোনের নাম বলল, প্রতিটি শব্দের সাথে তাদের ছিনতাই হওয়া আত্মার স্পার্কগুলি আলোর গোলকের মত বেরিয়ে এল। শারীরিকভাবে নয়, বরং আলোর সত্ত্বা হিসেবে, তারা সত্ত্বার কবল থেকে মুক্ত হয়েছে।

যখন রহিম এবং মায়ার আলোময় স্বত্ত্বারা তাদের বাবার চারপাশে জড়ো হয়েছিল, ইউসুফ মুদ্রাটিকে উঁচুতে তুলে ধরলেন। একটি চমকপ্রদ আলোর বিস্ফোরণ হল, এবং তাদেরকে ঘিরে থাকা বিভ্রান্তিকর জগৎটি ভেঙে গেল।

উপসংহার

হাঁপাতে হাঁপাতে, পরিবারটি বাস্তবে ফিরে আসছিল। ফিসফাসগুলি চলে গেছে, তারা কেবল রাতের তাপের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া একটি শব্দ হয়ে গেছে। ঢাকার আকাশে বর্ষা নামলো যেন জগৎকে শুদ্ধ করার চেষ্টা চলতে লাগলো । আনিকা তার ছেলেমেয়েদের ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরলেন। দরজার ফাটলগুলি বন্ধ করা হবে, অদৃশ্য বিশ্বের কথা কখনও বলা হবে না। তারা শিখেছিল যে দারিদ্র্য, যতই কঠিন হোক না কেন, অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা, নীরব প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোহিত হওয়ার চেয়ে ভালো।

শেষ কথা ঢাকার গলিপথে ফিসফাসের শব্দ আবার কখনো শোনা যায়নি – তদন্তকারীদের জন্য একটি ধাঁধা হয়ে রইলো। তবে কিছু বলল, সেই মুহূর্ত থেকে শহরের হৃদয়ে একটি নতুন শক্তি ছিল, হালকা, ক্ষণস্থায়ী, একটি অদৃশ্য প্রতিশ্রুতি যে আবার অন্ধকার আসলেও আলো চিরকাল বিদ্যমান।

Read more